হালদা নৌ-ফাঁড়ি ঃ সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও উল্লেখযোগ্য অর্জন।
তিনটা উপজেলায় হালদা নদী বিস্তৃত। পূর্ণাঙ্গ হালদা নৌ-থানা প্রস্তাবিত হয়েও লাল ফিতার দৌরাত্ম্যে যেন আটকে গেছে। তাই হালদা নদীতে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজ ঠেকানোর সবেধন নীলমনি হালদা অস্থায়ী নৌ-ফাঁড়ি। উত্তর মাদার্শার অধুনা বিলুপ্ত রামদাশ হাট বাজারে হালদার পাড় ঘেষেই এই পুলিশ ফাঁড়ির অবস্থান। সীমিত জনবল নিয়েই দেশের মৎসখাতের আঁধার খ্যাত হালদা নদীকে দখল-দূষণ থেকে রক্ষার কাজ করে যাচ্ছে এই নৌ- ফাঁড়ি। সংশ্লিষ্ট নৌ-ফাঁড়ির এই প্রতিবেদক সরাসরি কথোপকথনে জানতে পারেন, গত ২০২৪ সাল থেকে ২০২৫ এর ২৭ জুন পর্যন্ত এই ফাঁড়ি সংশ্লিষ্টরা প্রায় ১০০ ছোট বড় অভিযান পরিচালনা করেছেন। রাউজান উপজেলা, হাটহাজারী উপজেলার সাথে সমন্বয় করে ৮ টি মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়েছে। জরিমানা আরোপ হয়েছে জড়িত অপরাধীদের ওপর। হালদার পাড় ঘেষে বিভিন্ন জায়গায় ৮ টি সিসি ক্যামেরা বিভিন্ন সময়ে সংযোজন করা হয়েছিল। এই প্রতিবেদন তৈরীর দিন ( ২৭ জুন, ২০২৫ ইং তারিখ) আরও ৪টি সিসি ক্যামেরা সংশ্লিষ্ট নদীর বিভিন্ন পাড়ে সংযোজনের কাজ শুরু হয়েছে।
[caption id="attachment_1661" align="aligncenter" width="300"] উদ্ধারকৃত মৃত মাছ[/caption]
মাত্র ৬ জন জনবল নিয়ে সীমিত সামর্থ্যের মধ্যেও দারুণ কাজ করে যাচ্ছে হালদা নৌ-ফাঁড়ি টীম। তার মধ্যে একজন আবার স্পিডবোট চালক।
[caption id="attachment_1662" align="alignright" width="300"] মৃত মা মাছ ফাইল ছবি[/caption]
গত বছরে বিভিন্ন অভিযান পরিচালনার সুফল এবার হাতেনাতে পেয়েছে ডিমচাষীরা ; এমন মন্তব্য করেন হালদার নৌ-ফাঁড়িতে কর্মরত এএসআই রমজান। একের পর এক অভিযানে হালদা থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন বলতে গেলে শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে। কমেছে মা মাছ শিকারীদেরও দৌরাত্ম্য। যার ফলে হালদায় এবার বিগত ৫ বছরের মধ্যে রেকর্ড সংখ্যক ডিম সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে।তবে হালদার পানিতে অক্সিজেন কমে যাওয়া, পানির নেতিবাচক গুণাগুণের কারণে মা মাছ মরে ভেসে উঠে। কারণ বিস্তৃত হালদায় মাত্র ৬ জন জনবল নিয়ে কাজ করার কারণে অপরাধীরা নিয়মকানুনের খুব একটা তোয়াক্কা করেন না। এবারের কুরবানীর ঈদেও হালদায় নজিরবিহীন দূষণ হয়েছে বলে জানান তারা।এক্ষেত্রে দুইটা উপায়ে এই দূষণ রোধ করা যাবে বলে মনে করেন হালদা পাড়ের মানুষজন। প্রথমত, পরিবেশ অধিদপ্তর তথা সংশ্লিষ্ট উপজেলাগুলোর পরিবেশ অফিস থেকে অভিযান ও কার্যক্রম জোরদারকরণ। আর দ্বিতীয়ত, হালদা নৌ-থানা গঠনের যে প্রস্তাব উঠেছিলো সেটা যদি আলোর মুখ দেখে তাহলেও এসব দূষণ আর থাকবে না।সীমিত জনবলে হালদা নৌ-ফাঁড়ি যে উল্লেখযোগ্য কাজ করে যাচ্ছে, পূর্ণাঙ্গ হালদা নৌ-থানা বাস্তবায়ন হলে, হালদা দূষণ মুক্ত হওয়ার পাশাপাশি তার অতীতের রূপ ফিরে পেতে খুব একটা সময় লাগবে না।