হালদা প্রকল্প পরিদর্শনে মৎস্য উপদেষ্টা, তামাক চাষ বন্ধ ও ড্রোন নজরদারির ঘোষণা
রাউজান (চট্টগ্রাম), ১ জুলাই:
দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক রুই–কাতলা–মৃগেল প্রজননক্ষেত্র হালদা নদীর সুরক্ষা ও উন্নয়ন কার্যক্রম সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। সোমবার দুপুরে রাউজান উপজেলার মোবারকখীল হ্যাচারি প্রাঙ্গণে তিনি ‘প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্প’–এর অগ্রগতি দেখেন এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
[caption id="attachment_1679" align="alignleft" width="300"] পোনা অবমুক্তকরণ[/caption]
পরিদর্শনকালে উপদেষ্টা স্পিডবোটে চড়ে হালদা নদীর ২০ কিলোমিটার এলাকা ঘুরে দূষণ ও প্রাকৃতিক প্রজননক্ষেত্রের বর্তমান অবস্থা প্রত্যক্ষ করেন। তিনি নদীর পাড়ে তামাক চাষের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান ঘোষণা করে বলেন, ‘হালদা নদীর মা মাছের স্বাভাবিক প্রজনন চক্র রক্ষায় তামাক চাষ কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। তামাক চাষে মাটি ও পানির দূষণ হচ্ছে, যা প্রজনন ব্যাহত করছে। এ চাষ বন্ধ করতে হবে।’
[caption id="attachment_1680" align="aligncenter" width="300"] স্পিডবোটে হালদা পরিদর্শন[/caption]
তিনি আরও বলেন, হালদার স্বাভাবিক পানি প্রবাহ বজায় রাখতে অবৈধ বাঁধ ও রাবার ড্যাম অপসারণ করতে হবে। নদীর দুই পাড়ের চাষিদের বিকল্প আয়ের জন্য বিকল্প ফসল চাষে সরকার প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে বলে আশ্বাস দেন উপদেষ্টা।
নদীকে দূষণ ও অবৈধ কর্মকাণ্ডমুক্ত রাখতে নতুন করে চারটি ড্রোন ক্যামেরা উদ্বোধন করেন উপদেষ্টা। মৎস্য অধিদপ্তরের ১২টি টিম নিয়মিতভাবে ড্রোনের মাধ্যমে হালদার বিভিন্ন অংশ পর্যবেক্ষণ করবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খোন্দকার মাহবুবুল হক, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ,সাবেক মুখ্য সচিব আবদুল করিম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হালদা নদী গবেষক ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া, প্রকল্প পরিচালক মো. শাহ নেওয়াজ, চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র, রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, রাউজান মৎস্য কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, হালদা রক্ষা কমিটির নেতৃবৃন্দ ও গণমাধ্যমকর্মীরা।
সভা শেষে মোবারকখীল হ্যাচারিতে উৎপাদিত রুই, কাতলা ও মৃগেলসহ দেশীয় প্রজাতির পোনা নদীতে অবমুক্ত করা হয়। এতে স্থানীয় জেলেদের মধ্যে উৎসাহ জাগে।
হালদা নদী দেশের অন্যতম জীববৈচিত্র্যময় প্রাকৃতিক সম্পদ। একে টিকিয়ে রাখতে দূষণ, অবৈধ বাঁধ ও তামাক চাষ বন্ধের পাশাপাশি স্থানীয় জনগণকে বিকল্প আয়ের সুযোগ দিতে হবে। প্রযুক্তিনির্ভর নজরদারি হালদা রক্ষায় নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।