হালদা নিয়ে পরিবেশবাদী সংগঠন বহু আছে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনেরও অভাব নেই। দুয়েকটা ফাউন্ডেশন টাইপেরও পাওয়া যায়। হালদা নিয়ে আসলে সচেতনতা গড়ার চেষ্টা হচ্ছে বহুদিন যাবত। কিন্তু চমৎকার বিষয় হলো হালদা নিয়ে ভিন্ন ধাঁচের বেশ কিছু ইনোভেটিভ আইডিয়াও দেখা যাচ্ছে আজকাল। হালদাকে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক সময়ে তেমন একটি উদ্যোগ হলো হালদা রানার্স ক্লাব।
[caption id="attachment_1690" align="aligncenter" width="290"]
লোগো[/caption]
সোজা ভাষায়, দৌঁড়াব, দৌঁড়ে দৌঁড়ে হালদা কেন্দ্রীক সচেতনতা তৈরী করব। হালদাকে বাঁচানোর চেষ্টা করা, সাথে নিজেও সুস্থ ভাবে বাঁচার আয়োজন করা। রানিং কালচারটা বাংলাদেশে কেবলই শুরু হচ্ছে বলা যায়। তবে ইতিমধ্যেই এটা একটা মোমেন্টাম তৈরী করতে পেরেছে। দেশে কি পরিমাণ রানার্স গ্রুপ আছে তার কোন কংক্রিট তথ্য এখনো নেই। এবং অধিকাংশ রানার্স গ্রুপই মূলত স্বাস্থ্যের দিকটা বিবেচনা করে এসব কাজকর্ম বা ইভেন্ট আয়োজন করে থাকেন। তবে হালদা রানার্স এই জায়গায় ব্যতিক্রম। ছোট পরিসরে এটার পথচলা শুরু ; কিন্তু আইডিয়া ও থিমটা চমৎকার। হালদাকে বিপন্ন হওয়া থেকে বাঁচাতে হবে - এটাই এই ক্লাবের থিম। জাতীয় পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি নদীর একটি হলো হালদা নদী আর সে নদীকে কেন্দ্র করেই হালদা রানার্স ক্লাব।
[caption id="attachment_1687" align="alignleft" width="300"] ফাইল ছবিঃ ইভেন্ট প্রতিযোগীতা[/caption]
হালদা পাড়ের গ্রাম মাদার্শার ফরহাদ, শাহরূপসহ কয়েকজন উদ্যোমী তরুণ এই অ্যামেচার ক্লাবটি শুরু করেন। পঞ্জিকার হিসেবে বয়স একবছরও পেরোয়নি। তবে সামনে বেশ লম্বা পথ। আপাতত টার্গেট, তরুণদের এই সৌখিন দৌড় কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করা। আর তরুণ বলতে বয়সে তরুণ নয়, মানসিকতায় তরুণ যে কারো জন্য এই ক্লাবের দরজা উন্মুক্ত।
ইতিমধ্যেই Fitplay Bangladesh রান, CU Runners 10k event সহ বেশ কয়েকটি ইভেন্টে এই ক্লাব অংশগ্রহণ করেছে। নিজেদের ক্লাবের একক রান এখনো ঘোষণা করেনি এই ক্লাব। হালদা অ্যামেচার ম্যারাথন নামে ভবিষ্যতে একটা ১০ কিঃমিঃ ইভেন্ট আয়োজনের বিষয়টি এই ক্লাবের সদস্যরা মাথায় রেখেছেন। নিজেদের রেজিষ্ট্রেশন কার্যক্রম ও কপিরাইট নিয়েও কাজ চলমান বলে জানান তারা। আর তরুণরাই যেহেতু টার্গেট, তাই হালদা পাড়ের মানুষজন যেন মাদকবিরোধী মানসিকতা গড়ে তুলতে পারেন, তার জন্যও মাসিক বা বাৎসরিক ইভেন্ট চালু করতে চায় ক্লাবটি। আপাতত সেল্ফ-ফাইন্যান্সিং মডেল অনুসরণ করছে এই রানার্স ক্লাবটি।
এই ক্লাবের সদস্যরা জানান, পাশের দেশ ভারতে প্রতিবছর ১৫০০+ রানিং ইভেন্ট হয় ; যেগুলো পরিবেশ ও স্বাস্থ্য সচেতনতা তৈরী করে। এসব ইভেন্ট ভারতের জাতীয় অর্থনীতিতে প্রতি বছর ৪৫০ মিলিয়ন ডলার অবদান রাখে। আমাদের এখানে বিষয়টা চ্যালেঞ্জিং তবে এটাকে কমিউনিটি হিসেবে রূপ দেওয়া মোটেও অসম্ভব নয়। কারণ এসব এখন মানুষের আগ্রহের বিষয়।
হালদা পাড়ের তরুণদের এই উদ্যোগ ল্যান্ডমার্ক হয়ে উঠুক। হয়ে উঠুক হালদা রক্ষার ট্রেডমার্ক, সিগনেচার ইভেন্ট।